ত্বকের একরকম সমস্যার নাম আঁচিল। অনেকেরই তেমন কোনও ব্যথা বা চুলকানি না থাকলেও এই আঁচিল নিয়ে ভালরকম নাজেহাল হন। আসলে শরীরের বাইরের অংশে আঁচিল থাকলে, সেটা দেখতে খারাপ লাগে। কিন্তু জানেন কী, মাত্র কয়েক মিনিটের লেজার ট্রিটমেন্টের সাহায্যে সরিয়ে ফেলা যায় শরীরের যে কোনও জায়গার আঁচিল। অনেক সময় আঁচিল ভাইরাস সংক্রমণে হয়। কোনওটা আবার সূর্যের কিরণ থেকে হয়। আর মানুষের শরীরে জন্মগত কালো বা লাল তিল তো রয়েছেই।
আঁচিলের ধরন
আঁচিল তিন প্রকারের। এক, ‘ভেরুকা’ বা ‘ওয়ার্টস। যা এক বিশেষ ধরনের ভাইরাসের (হিউম্যান পপিলোমা ভাইরাস) কারণে হয়ে থাকে। সবচেয়ে ভয়ের কথা, এই ধরনের আঁচিল ছোঁয়াচে। রোগীর দেহেও বেশ দ্রুত ছড়ায়। রোগীর গামছা শেয়ার করলে বা শেভিং কিট অন্য কেউ ব্যবহার করলে এই রোগ অন্যের শরীরেও সহজেই সংক্রমিত হতে পারে। দুই, ‘অ্যাক্রোকর্ডন’ বা ‘স্কিনট্যাগ’। শুনতে জটিল মনে হলেও এটি তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতিকর। যাদের শরীরে ওজন বেশি, তাঁদের ঘাড়, কনুই বা থাইয়ের মাঝের ত্বকে এক ধরনের গুটি দেখা যায়। এগুলি ঠিক আঁচিল নয়।
সাধারণত, শরীরে হরমোনের অসামঞ্জস্য দেখা দিলে এই সমস্যার মুখোমুখি হন অনেকে। সব শেষে, লাল বা কালো তিল। ইংরেজিতে যাকে বলে ‘মোল’। সাধারণ কালো রঙের হয়। এবং জন্মগত। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সূর্যের কিরণ থেকেও ত্বকে কালো স্পট তৈরি হয়। আবার শরীরের কোনও ছোট্ট ব্লাড ভেসেল ফেটে লাল রংয়ের তিলও দেখা যায়। যাকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলে চেরি অ্যাঞ্জিওমা। যদি এই তিল আকারে বাড়তে থাকে এবং রক্তপাত হয়, তাহলে সতর্ক হওয়া জরুরি। কারণ, তিল থেকে অনেকের ক্যানসারও হতে পারে। তিল আর আঁচিলের ভেদ বোঝার সহজ উপায় হল, তিল থেকে চুল গজায়।
লেজারে মুক্তি
ওয়ার্টস বা আঁচিল বুঝতে থাইরয়েড, প্রজেস্টেরন, ইস্ট্রোজেন ইত্যাদি হরমোন লেভেল পরীক্ষা করে দেখা হয়। ওষুধ দিয়ে ওই আঁচিল থেকে মুক্তি মেলে না। অনেকে বাড়িতেই চুন, অ্যাসিড দিয়ে আঁচিল শরীর থেকে বাদ দিতে চান। সেক্ষেত্রে ফল আরও খারাপ হয়। কারণ, এতে ত্বক পুড়ে যায়। আজকাল আঁচিল সরিয়ে ফেলতে সবচেয়ে ভরসাযোগ্য পদ্ধতি হল লেজার। ট্রিটমেন্টের নাম সিওটু লেজার। আঁচিল হোক বা তিল, রিমুভ করার পর কোনও দাগও থাকে না। এই লেজার পদ্ধতিতে খুব যে খরচসাপেক্ষ তেমনটাও নয়। মিনিট দশেকের ছোট্ট লেজার পদ্ধতিতে খরচ পড়ে হাজার পাঁচেক টাকা। একটা সিটিংয়েই কাজ হয়। এছাড়াও রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি সার্জারি, ক্রায়ো সার্জারি রয়েছে আঁচিল তোলার জন্য। সূর্যের কিরণ থেকে যে তিল বা মোল হয়, তার থেকে বাঁচতে ভাল সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি।